‘পৃথিবী, মানুষ এবং সম্ভাবনা’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী রেজিলিয়েন্স ও সংস্কৃতি উৎসবের পর্দা নামল। উৎসবটির আয়োজন করেছিল অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ (এএবি)। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের মানুষের অপ্রতিরোধ্য মানসিকতা এবং বাংলাদেশের গৌরবময় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আচার-অনুষ্ঠান এই উৎসবের মধ্য দিয়ে তুলে ধরা হয়।
শুক্রবার (১০ জুন) রাজধানীর গুলশানের নাভিদ’স কমেডি ক্লাবে জলের গানের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এই উৎসবের পর্দা নামে। এর আগে ৯ জুন এ উৎসবের শুরু হয়।
শেষ দিনে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের তরুণদের অংশগ্রহণে ফ্ল্যাশ মুভ পরিবেশিত হয়। এছাড়াও, বিশিষ্ট বক্তাদের অংশগ্রহণে তিনটি ‘হিউম্যান বুক ক্যাফে’ সেশন ছিল, যাতে অংশ নিয়েছিলেন – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ, কমেডিয়ান ও কলামিস্ট নাভিদ মাহবুব, উদ্যোক্তা তানিয়া ওয়াহাব, সাংবাদিক ও গবেষক আফসান চৌধুরী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও মিডিয়া কর্মী শামীম আখতার, রিডিকিউলাস ফিউচারসের ফিউচারিস্ট, এডুকেটর ও স্টোরিটেলার শাকিল আহমেদ, দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন, অভিনেতা ও পরিচালক আফজাল হোসেন, গ্রিনসেভারের প্রতিষ্ঠাতা আহসান রনি, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ এবং একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির।
হিউম্যান বুক ক্যাফে সেশনে সাংবাদিক ও গবেষক আফসান চৌধুরী বলেন, এমন ঘটনা খুঁজে পাওয়া বিরল, যেখানে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের একটি প্যানেল সবাই একত্রিত হয়ে- বাংলাদেশ আজ কোথায় দাঁড়িয়েছে এবং জাতি হিসেবে আমরা কোথায় যাচ্ছি, সে বিষয়ে তাদের মতামত বিনিময় করতে পেরেছেন। এই ধরনের অনুশীলন আমাদের আলোকিত করতে পারে, যেমনটা ১৯৭১ সালে একটি জাতি গঠিত হয়েছিল, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। ১৯৭১ সালে কিভাবে আমাদের জাতির ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল, সে সম্পর্কে আমরা যত বেশি জানব, ততই আমরা উন্নতি করতে পারব।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, আমাদের সম্প্রদায়ের স্থিতিস্থাপকতার বিভিন্ন গল্প তুলে ধরতে, সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে এবং বিশেষ করে তৃণমূলস্তরের মানুষের সাহসী গল্পগুলো ভাগ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমরা প্রথমবারের মতো এই উত্সবটির আয়োজন করেছি।
বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের মানুষ জলবায়ু ও মানব-সৃষ্ট বিপর্যয়, বৈষম্য, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, শরণার্থী সংকট ও বৈশ্বিক মহামারিসহ অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই মানুষ নতুন উদ্যমে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে এবং অপ্রতিরোধ্য গতিতে সামনে এগিয়ে গিয়েছে। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ হচ্ছে গত দুই বছরে দেশে কোভিড-১৯ মহামারির প্রকোপ। করোনা মহামারি সংকটের সময় দেশের জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অনিশ্চয়তা ও হতাশার মধ্যেও মানুষকে আশাবাদী ও প্রাণোচ্ছল থাকতে সাহায্য করেছে। দেশের মানুষের এই সহজাত প্রবৃত্তি এবং অপ্রতিরোধ্য মানসিকতা উদযাপনের দাবি রাখে। আর তাই অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ এই উৎসবের আয়োজন করেছে।
জা//দেশতথ্য/১০-০৬-২০২২//১০.০৬ পিএম

Discussion about this post