কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠানে সাধুদের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে আহত ও সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান বন্ধ করার ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। ঘটনার দু’দিন পর সোমবার সন্ধ্যায় ১৯জনের নাম উল্লেখ সহ ৩১জনের নামে দৌলতপুর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। যার নং ১৫। মামলা হলেও ঘটনার সাথে জড়িত হামলাকারীদের কেউ গ্রেফতার হয়নি।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার সময় উপজেলার সদর ইউনিয়নের লাউবাড়িয়া গ্রামের মো. কিনু মন্ডলের ছেলে লালন ভক্ত পলান মন্ডল (৩৭) প্রতি বছরের ন্যায় শনিবার রাতে নিজ বাড়ির একটি ঘরে ঘরোয়া পরিসরে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে যোগ দেয় তার গুরু দরবেশ ফজল ফকির সহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাউল, সাধু, লালন ভক্ত ও অনুসারীরা।
রাতে সেবা গ্রহণের সময় একই এলাকার ২৫-৩০ জন লোক সাধুদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা সাধুদের এলোপাতাড়িভাবে বেধড়ক মারপিট করে। সাধুরা নীরবে তা সহ্য করে। সাধুসঙ্গের আয়োজনকারী ভক্তরা হামলাকারী দূবৃর্ত্তদের বাঁধা দিতে গেলে তারাও হামলার শিকার হন।
হামলায় পলান মন্ডল (৩৭), পলাশ মন্ডল (৩০), প্রবীণ সাধু ফজল ফকির (৭০), মাজেদা ফকিরানী (৫০) ও আকলিমা খাতুন (৪০) জন সহ অন্তত ৮জন বাউল, সাধু ও লালন ভক্ত আহত হোন। আহতদের উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে তারা এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের মধ্যে তারাগুনিয়া গ্রামের মাজেদা ফকিরানীর অবস্থা আশংকজনক বলে জানাগেছে।
এ ঘটনায় সাধুসঙ্গের আয়োজক লালন ভক্ত মো. পলান মন্ডল বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ১০-১২জনকে আসামী করে রবিবার সকালে দৌলতপুর থানায় এজাহার দেন। এজাহার দায়েরের পরদিন সন্ধ্যায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠানে সাধুদের ওপর হামলার ঘটনায় দৌলতপুর থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, এ ঘটনায় সোমবার মামলা দায়ের হয়েছে যার নং ১৫। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলামান রয়েছে।
এদিকে লালন অনুসারী সাধু ভক্তদের ওপর হামলার ঘটনায় দৌলতপুর সহ সারা দেশে বাউল সাধুদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন এলাকার সুধী ও সচেতন মহল।
বা//দৈনিক দেশতথ্য//৯ নভেম্বর ২০২২//

Discussion about this post