সিলেট অফিস: সিলেটের ৩ হাজার হকারকে এক স্হানে বসিয়ে তাদেরকে ব্যাবসা করার সুযোগ করে দিয়েছেন সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। রাস্তা থেকে হকার উচ্ছেদ করে লালদীঘিরপাড় হকার মার্কেটে একটি
নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের স্হান করে দেওয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন সিলেটের মেয়র।
নগরীর সৌন্দর্য বর্ধন ও পথচারীদের নিরাপদ রাস্তা নিশ্চিত করায় দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাথে হকার নেই। সব চলে গেছে পুনর্বাসন স্থান হকার মার্কেট মাঠে। এখানে বাড়ছে বিকিকিনিও।
হকাররা জানিয়েছেন, ক্রেতারা আসছেন। এ কারণে বিশেষ করে নিত্যপণ্যের বাজারে বিক্রি বাড়ায় জিনিসপত্র থাকছে না। কিছুটা অসুবিধায় আছেন কাপড়ের ব্যবসায়ীরা। বৃষ্টি এলে কাপড় ভিজবে। এ কারণে তাদের পক্ষ থেকে উপরে ছাদ দেয়া হচ্ছে।
হকাররা জানিয়েছেন, আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে বাঁশ ও কাপড় দিয়ে ছাদ তৈরির কাজ শেষ হবে। এরপর কাপড়ের ব্যবসায়ীরা পুরোদমে বসবেন।
তবে- মাঠে যেসব সমস্যা রয়েছে সেসব সমস্যা সমাধানে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এখনো কাজ করা হচ্ছে। সর্বশেষ দুটি বাথরুম নির্মাণের কাজ চলছে। একটি ডিপটিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া আগেই লাইটিং করে দেয়া হয়েছে। পুরো মাঠকে মাটি ভরাট করে দেয়া ছাড়াও ইট বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। ফুটপাথ ছেড়ে যাওয়া হকাররা এখন তাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে যেসব কথা বলছেন; সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সেগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন লালদীঘিরপাড় হকার মার্কেটে ভেতরে থাকা হকারদের জন্য বড় সমস্যা হচ্ছে রাস্তা। ওই মাঠের নিজস্ব কোনো স্থায়ী রাস্তা নেই। একাধিক রাস্তা থাকলেও সেগুলো ব্যবহার করছে অন্যান্য মার্কেট। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সিটি সুপার মার্কেট, কুদরত উল্লাহ মার্কেট, হকার মার্কেটসহ কয়েকটি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা রাত ১০টার মধ্যে তাদের দোকান বন্ধ করে দেন। ফলে হকার মার্কেটে মাঠে থাকা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের ঢুকতে ও বের হতে সমস্যা দেখা দেয়।
সিলেটের হকার ঐক্য পরিষদের সভাপতি আব্দুর রকিব জানিয়েছেন, আমাদের এখন আর ওই মার্কেটে তেমন কোনো সমস্যা নেই। ইতিমধ্যে এ মাঠে অন্তত ৩ হাজার হকার এসে ঢুকে গেছে। মাঠের বাইরে যারা থাকবে তাদের উচ্ছেদ করলে হকার সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।
তিনি বলেন, আমাদের তালিকায় যারা ছিলেন তাদের অধিকাংশই দোকান বরাদ্দ পেয়ে গেছেন। এখন যারা নতুন আসছেন তাদেরও জায়গা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সিলেটের অন্যতম একটি বাজার হবে লালদীঘিরপাড় হকার মার্কেট। এখন একটি সমস্যা। সেটি হচ্ছে রাস্তা। সিটি করপোরেশন খুবই আন্তরিক। গতকালও কর্মকর্তারা এসে মাঠ পরিদর্শন করে গেছেন।
এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে- সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান গতকাল রাস্তা বের করার জন্য মাঠ পরিদর্শন করেছেন। স্থায়ী রাস্তা বের করে দিতে সিলেট সিটি করপোরেশন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেন, কুদরত মার্কেটের পাশ দিয়ে রাস্তা করা যায় কিনা- এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। একটি রাস্তা রয়েছে।
গত ১৬ই জানুয়ারি সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারের এক সভায় নগরের হকার উচ্ছেদে এক মাসের সময় নিয়েছিলেন সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। কিন্তু ১৬ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে তিনি সে কাজ করতে পারায় তীব্র বিতর্কের মধ্যে পড়েন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এমনকি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আল্টিমেটাম দেয়া হয়। তবে হকারদের সঙ্গে আলোচনা করে সিটি মেয়র আনোয়ার নগরের লালদীঘিরপাড় হকার মার্কেট মাঠকে প্রস্তুত করতে ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার কাজ দেন। মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে তারা মাঠ প্রস্তুত, হকারদের তালিকা করে রোববারই তাদের হকার মার্কেট মাঠে পুনর্বাসন করেন। এখন হকাররা মাঠেই আছে। এই অবস্থায় সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরের ফুটপাথে বসা হকারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। প্রতিদিনই তারা নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাস্তা বসা হকাররা উচ্ছেদ করে দিচ্ছেন। এর ফলে বাকি থাকা হকাররা এখন মাঠমুখী হচ্ছেন।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ১৩ মার্চ ২০২৪

Discussion about this post