করোনা মহামারীর কারণে প্রায় দুবছর কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়াস্থ লালন আখড়া বাড়িতে বন্ধ ছিল। যার ফলে বাউল সাধক ফকির লালন শাহ’র স্মরণোৎসব ও লালন তিরোধান দিবসের কোন অনুষ্ঠান হয়নি।
করোনার সংকট কাটিয়ে দোলপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) থেকে তিন দিন চলবে লালন স্মরণোৎসব।
দীর্ঘ দু বছর পর লালন স্মরণোৎসব শুরু হতে যাওয়ায় ইতোমধ্যে সাধু ভক্তদের মিলন মেলায় পরিণত হতে শুরু করেছে লালনের আখড়া বাড়ি।
লালন স্মরণোৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের মত এবারও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় তিন দিনের অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করেছে লালন একাডেমি।
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র এই অমর বাণীকে ধারণ করে শুরু হওয়া এ উৎসব চলবে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) পর্যন্ত।
অনুষ্ঠান মালায় থাকছে লালনের কর্মময় জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা সভা, সংগীতানুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলা। এদিকে লালন স্মরণোৎসবকে সফল করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। রোববার বিকেলে লালন একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিং-এ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম আশা প্রকাশ করে জানান, দীর্ঘ দিন পর লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন হওয়ায় এবার প্রচুর লোক সমাগম হবে। তাই এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকছেন।
সরেজমিনে লালন মাজারে ঘুরে দেখা গেছে, তিন দিন ব্যাপী এই আয়োজনকে ঘিরে এরই মধ্যে দেশ-বিদেশ থেকে ভক্ত-সাধুরা লালনের আখড়া বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন। চলছে আখড়া বাড়ির সাজ-সজ্জা। মূল মাজারের সামনের কালী নদীর তীরে চলছে মঞ্চ ও গ্রামীণ মেলার প্রস্তুতি।
জানা যায়, বাউল সম্রাট লালন শাহ তাঁর জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে প্রতি বছর চৈত্রের দোল পূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে সাধুসঙ্গ উৎসব করতেন।
১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তাঁর মৃত্যুর পরও লালন ভক্ত অনুসারীরা এই উৎসব চালিয়ে আসছেন। দীর্ঘ দিন পর এই অনুষ্ঠান শুরু হতে যাওয়ায় বাউল ভক্ত ও সাধুদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
এবি/দৈনিক দেশতথ্য//মার্চ ১৩, ২০২২//

Discussion about this post