বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শ্রমিকদের অবরোধের কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল রোড বন্ধ ছিল। এতে চরম ভোগান্তীতে পড়েছিল ঘরমুখো যাত্রীরা। শ্রমিক ও মালিকদের সাথে আলোচনার পর রাতে আবরো ওই মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে।
জানা গেছে বেতন ও বোনাসের দাবীতে বিকেলে কারখানা শ্রমিকরা গোড়াইয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে টিয়ারসেল পরে গুলি বর্ষণ করে। টিয়ার সেল ও গুলিতে ওসি, পুলিশ ও আনসারসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গোড়াই শিল্পাঞ্চলের নাহিদ কটন মিলে এ ঘটনা ঘটে।

কারখানা শ্রমিকরা জানায়, কর্তৃপক্ষ এপ্রিল মাসের ১৫ দিনের বেতন ভাতা দিয়ে ঈদের ছুটি ঘোষনা করেছে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিকেল তিনটার দিকে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। কারখানার আনসার ও হাইওয়ে পুলিশ তাদের বাঁধা দিলে উত্তেজিত শ্রমিকরা তাদের উপর হামলা চালায়।
মির্জাপুর থানার ওসি মো. আলম চাঁদ জানান, এপ্রিল মাসের অর্ধেক বেতন ভাতা নিয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় বহিরাগত ও শ্রমিকরা মিলে কারখানা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ব্যাপক ভাংচুর করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। দুই পাশে ২০ কি. মি. যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে বিপাকে পড়েন ঈদে বাড়ি ফেরা হাজার হাজার যাত্রী।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ বাঁধা দিতে গেলে শ্রমিকরা তাদের উপর হামলা চালায়। পুলিশ নিজেদের আত্নরক্ষার জন্য টিয়ারসেল ও গুলি ছুড়ে। এ সময় শ্রমিকদের ইট পাটকেলেল আঘাতে মির্জাপুর থানার ওসি মো. আলম চাঁদ, হাইওয়ে থানার ওসি মো. আজিজুর হক, দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আইয়ুব খান, সেকেন্ড অফিসার মোস্তফা, পিএসআই হাবিব, সেকান্দার, নাহিদ কটন মিলের আনসার সদস্য আলমগীর, মোর্শেদ ও শিপনসহ ১৫ জন আহত হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এমপি খান আহমেদ শুভ, সহকারী পুলিশ সুপার (মির্জাপুর-নাগরপুর সার্কেল) এ এস এম আবু মনসুর মোসা, কারখানার জিএম মো. শহিদুল আলম, মির্জাপুর থানার ওসি মো. আলম চাঁদ শ্রমিক নের্তৃবৃন্দসহ কারখানায় আলোচনায় বসেন। উভয় পক্ষের মধ্যে ফল প্রসু আলোচনার প্রেক্ষিতে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে দিলে রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ ব্যাপারে নাহিদ কটন মিলের জিএম মো. শহিদুল আলম বলেন, সরকারী নির্দেশনা মেনে তারা শ্রমিকদের পুর্ন বেতন ভাতা দেওয়ার পর ও কিছু বহিরাগত শ্রমিক নেতা মিলে কারখানার শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে অন্যায় ভাকে এই হামলা ও ভাংচুর চালায়। হামলা ও ভাংচুরে কারখানায় অন্ত পক্ষে ১৫-২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পুলিশ ও আনসারসহ ১৫ জন আহত হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। রাতে এ রিপোর্ট পাঠানো পর্যন্ত কারখানায় পরিবেশ থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
মির্জাপুর থানার ওসি মো. আলম চাঁদ বলেন, কারখানার শ্রমিকরা অন্যায় ভাবে হামলা ও ভাংচুর করে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। তাদের শান্ত করতে গেলে হামলা ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের আহত করেন। তাদের চিকিৎসা চলছে। স্থানীয় এমপি, সহকারী পুলিশ সুপার, কারখানার মালিক ও কর্মকর্তা এবং শ্রমিকদের সঙ্গে জরুরী সভা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//এপ্রিল ২৮,২০২২//

Discussion about this post