মো.আলাউদ্দীন, হাটহাজারীঃ হাটহাজারী পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের(সওজ) সরকারি জায়গা দখলের পায়তারা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবে সরকারি সম্পত্তি দখল করার দুঃসাহস দেখে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, সওজের জায়গায় কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ হলেও এর তোয়াক্কা করছে না প্রভাবশালীরা।এমনকি সওজের জায়গার ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ না করার আইন থাকলেও তাও মানা হচ্ছে না।
সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা জানান, উপজেলার ভাইনজইন ব্রীজ থেকে সত্তারঘাট এলাকার আগ পর্যন্ত এবং মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বাজারের উত্তর পাশে মহিলা মাদ্রাসার সামনে মহাসড়কের পশ্চিম পাশ সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নানান কায়দায় ধীরে ধীরে সওজের সরকারি জায়গা বেদখল হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার আনাচে-কানাচে কৃষি জমি থেকে স্কেবেটর দিয়ে মাটি কেটে আবার কোথাও পাহাড় কাটা মাটি, কোথাও বালি ও ইটের খোয়া ফেলেও মহাসড়কের পাশের সরকারী সওজের মূল্যবান জায়গা দখল করার একপ্রকার প্রতিযোগীতা চলছে বলা যায়। উপজেলার ভাইনজইন ব্রীজের দক্ষিণ পূর্ব পাশে কে বা কারা রাতের আঁধারে ধীরে ধীরে সুকৌশলে অল্প অল্প মাটি ফেলে সওজের সরকারি মূল্যবান জায়গা দখল করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে জড়িত কাউকে পাওয়া না গেলেও আশেপাশের লোকজনদের সাথে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কাশেম গ্রুপের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর ওই জায়গাটি ভরাট করছেন।
পরে এ ব্যাপারে কাশেম গ্রুপের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি মিথ্যা দাবী করে জানান, ওখানে কে মাটি ফেলছে সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। তবে একটা স্বার্থান্বেষী মহল আমার সুনাম নস্ট করতে ওইসব মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। মূলত আমি ওসবের কিছুই জানিনা।
স্থানীয় সচেতনমহল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সওজ অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজেশ রয়েছে ওইসব অবৈধ দখলবাজ প্রভাবশালী ভূমিদস্যূদের। যার ফলে স্ব-স্ব এলাকার তারা দিন দিন সরকারি মূল্যবান সম্পদ দখল করেই চলেছে। দায়িত্বশীলরা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জড়িতদের পাওয়া না গেলে স্থানীয় বা সেখানে উপস্থিত কেউ জড়িতদের ঠিকানা দূরে থাক নামটাও বলতে চাননা। যার কারনে অনেক সময় অপরাধী বা জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থাও গ্রহন করা যায় না।
জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের(সওজ) উপ সহকারী প্রকৌশলী আবু আহসান মুঃআজিজুল মোস্তফা সওজ অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের বিষয়টি মিথ্যা ভিত্তিহীন দাবী করে বলেন, আমরা খবর পেলেই দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধ দখলকারিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ণেই। আর উল্লেখিত এলাকার ব্যাপারে সঠিক তথ্যের জন্য রাউজান উপজেলা সওজের সহকারী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। পরে রাউজান উপজেলা সওজের সহকারী প্রকৌশলী মো.শাহিদুল আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সুবেদার পুকুর পাড় সংলগ্ন ভাইঞ্জন ব্রীজের দক্ষিণ পূর্ব পাশে সওজের জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে যেখানে মাটি ভরাট করছে আমরা খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে কাউকে পাইনি। এবং প্রকৃতপক্ষে কারা এ কাজের সাথে জড়িত তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভ’মি)আবু রায়হান জানান, এ অবৈধ কাজের সাথে যে বা যারাই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)মো.শাহিদুল বলেন, “মহাসড়কের পাশে সওজের সরকারি জায়গায় কোনো ধরনের স্থাপনা করার সুযোগ নাই। এ ব্যাপারে খবর নিয়ে আমি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। এছাড়া কোথাও কোনো সরকারি সম্পদ দখলের খবর পাওয়া গেলে বা নজরে আসলে দ্রুত উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর জন্য সকল সচেতন মহলের প্রতি অনুরোধও জানান তিনি।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post