মেহেরপুরের গাংনীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩ টি বসতঘর, ৩ টি রান্না ঘর, ২ টি গোহালঘর, ৩ টি গরু, ১০ টি ছাগল ও নগদ টাকাসহ ৫ টি পরিবারের প্রায় ৯ লক্ষাধিক টাকার মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে।
রোববার (২৩ এপ্রিল), বেলা ১ টার দিকে গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের লক্ষ্ণীনারায়ণপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়াতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে পরে তা পার্শ্ববর্তী ঘর, গোহাল ও রান্না ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।
তিনারা জানান, ঈদ উপলক্ষে এলাকার অধিকাংশ লোকজন বাড়িতে না থাকায় স্থানীয় কিছু লোকজনের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। ফলে লক্ষ্ণীনারায়ণপুর পশ্চিমপাড়ার আছের আলীর একটি রান্না ঘর, বসত ঘর, বসতঘরে থাকা সমিতি থেকে তোলা ৪০ হাজার টাকা ও দোকানে বেচাকেনার ১০ হাজার টাকা, ১ টি ৩২” কালার টেলিভিশন, গোহালে থাকা ১ টি গরু, ৫ টি ছাগলসহ সকল কিছু পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। ঘটনায় ১ টি গরু আংশিক পুড়ে যায় এবং অপর একটি গরু বেশি পুড়ে যাবার কারণে জবেহ করা হয়েছে। এতে আছের আলীর নগদ টাকাসহ প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে বলে ভুক্তভোগী আছের আলী জানিয়েছেন।
এদিকে একই ঘটনায় পাশের বাড়ির জিনারুল ইসলামের বসতঘর, রান্না ঘর, গোহাল ঘর, ২ টি ছাগল ও আসবাবপত্রসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল, জাহাঙ্গীর আলমের রান্না ঘর, গোহাল ঘর, ৩ টি ছাগল ও আসবাবপত্রসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল, জহুরুল ইসলামের রান্না ঘর, ২ টি ছাগল ও আসবাবপত্রসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল এবং অসহায় তুরপুন নেছার বসতঘর ও আসবাবপত্রসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। ঘটনায় ৫ টি পরিবারের সকল কিছু পুড়ে ভস্মীভূত হওয়ায় তিনারা একেবারে পথে বসে গেছেন।
গ্রামবাসীরা জানায়, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটার পর বাতাস থাকায় তা মূহুর্তের মধ্যে পাশের বাড়ি, গোহাল ঘর ও রান্না ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের নং না থাকায় কি করবে ভেবে ওঠার পূর্বেই মূহুর্তের মধ্যে সকল কিছু পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ৫ টি পরিবারের নগদ টাকাসহ প্রায় ৯ লক্ষাধিক টাকার মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এহেন ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বাভাবিক ভাবে পূর্বের মতো বেঁচে থাকতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, জেলা প্রশাসন, গাংনী উপজেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এদিকে সোমবার (২৪ এপ্রিল), বেলা ১২ টার দিকে কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। এসময় তিনি ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মাঝে ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাউল, নগদ অর্থ ও কম্বল বিতরণ করেন। একই সময়ে মহল্লার অন্যান্য অসহায় পরিবারের মাঝেও অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।
মিজানুর রহমান রানা ভুক্তভোগীদের আশ্বস্ত করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র সরকার সবসময় গরীব দুঃখীদের পাশে রয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা যাতে আবার নতুন করে ঘর তৈরি করে বসবাস করতে পারেন সেজন্য টিন, নগদ অর্থসহ সকল ধরনের সহযোগিতার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে সকল ধরনের ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে কাথুলী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজমাইন হোসেন টুটুল, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কাবের আলী, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান পল্টু, দার্জেল হক, গণমাধ্যম কর্মীসহ গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ২৫ এপ্রিল ২০২৩
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post