নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনা বিভাগের শতাধিক সরকারি প্রাইমারি স্কুল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।দুশ্চিন্তার মূল কারণ হচ্ছে, এসব স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০-এর নীচে। প্রাক প্রাথমিকসহ ছয়টি শ্রেণিতে আশঙ্কাজনকভাবে কম শিক্ষার্থী থাকার কারণে বিদ্যালয়গুলো নিয়ে কী করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এরমধ্যে যশোর জেলাতেই এমন ১৬টি স্কুল রয়েছে যাদের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ জনের কম।
সূত্র জানিয়েছে, খুলনা জেলার রয়েছে ৪৬টি, বাগেরহাটের ২৩ টি, সাতক্ষীরার ৯টি , নড়াইলের ৮টি, ঝিনাইদহের ৩টি ও কুষ্টিয়ার ১টি বিদ্যালয় রয়েছে।
বিপুল সংখ্যক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংকটের এই পরিস্থিতিকে অনভিপ্রেত হিসেবে আখ্যায়িত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের হোম ভিজিটে অনীহা, অত্যন্ত দুর্বল পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির হার কমে গেছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার-ডিপিইওকে বিস্তারিত উল্লেখ করে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়। ডিপিইও আশরাফুল আলম যোগদান করেই ১৬ টি বিদ্যালয়ের তথ্য পাঠিয়েছেন মন্ত্রণালয়ে। ‘এপিএসসি ২০২৩ এর ডাটাবেজে ০-৫০ শিক্ষার্থী বিশিষ্ট বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তথ্য’ শিরোনামে জেলার এই ১৬ বিদ্যালয়ের বিস্তারিত পাঠানো হয়েছে। যার স্মারক নম্বর ৩৮.০১.৪১০০.০০০.৩৬.০০৯.২০-২৭০, তারিখ ০৫.০২.২০২
যশোর জেলায় ৫০ জনের কম শিক্ষার্থীর ১৬ টি স্কুলের মধ্যে মণিরামপুর উপজেলায় ১০ টি, কেশবপুরে চারটি, সদর উপজেলায় একটি ও অভয়নগরে একটি রয়েছে। সদর উপজেলার যে স্কুলটিতে পঞ্চাশের নীচে শিক্ষার্থী সেটি হচ্ছে দক্ষিণ ভাটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া, অভয়নগরে হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেশবপুরের সানতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পল্লীমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তেঘরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এছাড়া মণিরামপুর উপজেলার ১০ স্কুল হচ্ছে, পাঁচকাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ পাঁচকাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুমারসীমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপমহল মদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামিনীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাটগাছা মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর দহাকুলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বয়ারখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জোকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
খুলনা বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোসলেম উদ্দিন বলেন, বেশকিছু স্থানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। এগুলোর জন্য প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি সামাজিক কারণও রয়েছে। ফলে ওইসব স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। শিক্ষকরাও অনেকটা গা ভাসিয়ে কাজ করছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেসব স্কুলে শিক্ষার্থী কম সেগুলোকে পার্শ্ববর্তী স্কুলের সঙ্গে একীভূত করে ক্লাস নেওয়া হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post