বেরোবি প্রতিনিধি , ইবতেশাম রহমান সায়নাভ: ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রতীক হিসেবে তারা শাড়ি ও চুড়ি দিয়ে নিন্দা জানান।
রবিবার (২০ জুলাই, ২০২৫) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে প্রক্টর ও ছাত্র পরামর্শকের চেয়ারে প্রতীকীভাবে শাড়ি জড়িয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন—
“ক্যাম্পাসে রাজনীতি চলে, প্রশাসন শাড়ি পড়ে!”,
“লেজুড়ের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না!”,
“শিক্ষা ও সন্ত্রাস একসাথে চলে না!”,
“আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে নোংরা রাজনীতি চলবে না!”,
“প্রশাসন যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারে, তবে সরে দাঁড়ান!”
শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন বলেন, “প্রশাসন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা উপেক্ষা করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে কিছু সংগঠন। এতে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরা চাই না দ্বিতীয় আবু সাঈদের মৃত্যু দেখতে। অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রলীগের সিট দখল, র্যাগিং, গেস্টরুম কালচার—এসব নিয়ে প্রশাসন বরাবরই নিরব থেকেছে। তাই প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে শাড়ি ও চুড়ি দিয়ে তাদের ব্যর্থতা তুলে ধরেছি। দায়িত্ব পালন করতে না পারলে পদত্যাগ করুন।”
শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, “এই নোংরা রাজনীতির কারণেই আমরা সাঈদকে হারিয়েছি। এখন প্রশাসনের প্রশ্রয়ে সেই রাজনীতি আবার ফিরে আসছে। আমাদের বার্তা স্পষ্ট—ছাত্র সংসদ ছাড়া কিছুই মানা হবে না। ব্যবস্থা না নিলে আমরা রাজপথে নামব।”
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় ‘লেজুড়বৃত্তিক’ ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।
তবে এরপরও ২০২৫ সালের ৯ জুলাই ইসলামী ছাত্রশিবিরের বেরোবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে মো. সুমন সরকার সভাপতি ও আব্দুর রাকিব মুরাদ সেক্রেটারি নির্বাচিত হন।
অন্যদিকে, ১৯ জুলাই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বহিরাঙ্গন পরিচালক ড. মো. ফেরদৌস রহমান একটি খেলাধুলার অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। ২০ জুলাই ছাত্রদলের ব্যানারে সদস্য সংগ্রহ ও কর্মী সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়।
এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “একজন সিন্ডিকেট সদস্য হয়ে যিনি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করেছেন, তিনি কীভাবে ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেন? এটি তো আইন ও নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর মতোই।”

Discussion about this post